Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

মনপুরা উপজেলার ব্যবসা বাণিজ্য

 

মেঘনা বিধৌত পলি মাটির আদরে লালিত ভোলা জেলার পুরনো দ্বীপগুলোর অন্যতম দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় প্রায় লক্ষাধিক লোকের বসবাস। দ্বীপটি ভোলা জেলার সবচেয়ে পুরনো দ্বীপ হলেও এতে বসতী গড়ে ওঠে প্রায় ষোড়স শতাব্দীতে বলে মনে করছেন ইতিহাসবিদগন। ধারনা করা হচ্ছে প্রায় ১৬০০ খ্রীষ্টাব্দে এখানে সর্বপ্রথম পর্তুগিজ জলদস্যুরা আস্তানা গেড়ে বসতী গড়ে তুলেছিল। আর্তসামাজিক ও মানবিক বিবর্তনের ফলে ধীরে ধীরে চলে যেতে থাকে পর্তুগীজ জলদস্যুরা। পরবর্তী সময়ে প্রায় ১৮০০ শতাব্দীতে মানুষ যখন আবিষ্কারের নেশায় মগ্ন ঠিক তখনই এই মনপুরা দ্বীপে আস্তে আস্তে জেলার স্থানীয় মানুষের বসবাসের আবাস গড়ে ওঠে। সেই থেকে অদ্যাবদী দুই শতক পেরিয়ে আধুনিক সভ্যতার যুগে প্রতিষ্ঠিত মনপুরা উপজেলা। এই দ্বীপে মানুষ বাড়ার সাথে সাথে বেড়েছে দ্বীপবাসীর নিত্যনতুন চাহিদা। আর মানুষের  দৈনন্দিন চাহিদা পুরনে মানুষ জড়িয়ে পড়ছে নতুন নতুন পেশার সঙ্গে।  জিবিকা নির্বাহের জন্য আধুনিক বিশ্বের বৃহৎ অংশ জুড়ে রয়েছে ব্যাবসা-বানিজ্য। এই পেশা থেকে এখন মনপুরার মানুষ ও পিছিয়ে নেই। অন্যান্য পেশার পাশাপাশি মেঘনা বেষ্টিত দ্বীপ উপজেলা মনপুরার মানুষের একটি বৃহৎ অংশ ব্যাবসার সাথে জড়িত। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের ন্যায় মনপুরার মানুয়ের ব্যবসা ও রয়েছে স্ববিস্তারে। মনপুরা এই দেড় লক্ষ জনগোষ্ঠির প্রায় ৮০ ভাগ মানুষই ব্যাবসার সাথে জড়িত। তবে এর ধরন একটু আলাদা আলাদা।

মৎস্য ব্যবসাঃ

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সবুজের সমারোহে বেষ্টিত মনপুরা উপজেলার প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষই মৎস্য ব্যবসার সাথে জড়িত। তবে বেশীর ভাগই রূপালী ইলিশ এর ব্যবসার সাথে জড়িত। কেউ মাছ কিনে নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অভিজাত বিপনীতে বিক্রি করছেন। আর কেউ নৌকায় করে গভীর সাগরে জাল ফেলে মাছ ধরে আড়ৎদারদের কাছে বিক্রি করছেন। প্রকৃতঅর্থে যারা ইলিশ মাছ ধরছেন তারাও এক প্রকারব্যবসায়ী। আর যারা জেলেদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে ঢাকায় বিক্রি করছেন তারাও ব্যবসায়ী। মূলত এই ইলিশের ব্যবসাটা বছরের অর্ধেক সময় অর্থাৎ বর্ষার মৌসুম থেকে শুরু করে প্রায় ৬ মাছ চলে।

কৃষি এবং ধান ব্যবসাঃ

দ্বীপ উপজেলা মনপুরার প্রায় ৮০ ভাগ মানুষই কৃষিজীবি। এখানকার প্রায় বেশীরভাগ মানুষই দারিদ্র সীমান নিচে বসবাস করে। তাই কোনো না কোনোভাবে তারা কৃষি কাজ সংশিস্নষ্ট। বছরের প্রায় ছয় মাস এখানে বর্ষা মৌসুম হয়ে থাকে। তাই বর্ষার সময় এখানকার মানুষ ধানচাষ করে। এখানে উৎপন্ন হয় প্রায় হাজার হাজার মেট্টিকটন ধান। সেই ধান দেশের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে মানুষ জিবিকা নির্বাহ করে। তবে এখানে বর্ষা ছাড়া বছরে বাকী সময় রবি শস্য উৎপাদন করা হয়। যা এখানকার চাহিদা পূরন করে দেশরে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয়। এখানে স্থানীয় সকলের নিজস্ব জমি নাথাকলেও কেউ কেউ অধ্যেক ভাগে জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে। অথবা কিউ কেউ নগদ টাকার বিনিময়ে জমি লীজ নিয়ে নিজের জীবিকা নির্বাহ করে।

বাজারে দোকান দিয়ে ব্যবসাঃ

মনপুরার মানুষের জীবিকা নির্বাহের ধরন অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে একটু আলাদা হলেও এখানে রয়েছে একপ্রকার অভিজাত শ্রেনী। সভ্যতার বিকাশর পাশাপাশি এখানে গড়ে উঠেছে একাধিক হাট-বাজার। এসব হাট-বাজারে গড়ে উঠেছে প্রায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে হরেক রকম বাহারী দোকান। বাজারে এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে মুদি দোকান, মেডিসিন, ডায়াগনস্টিক, কসমেটিক্স, স্টেশনারী, লাইব্রেরী, গার্মেন্টস, টেইলার্স, বস্ত্রালয়, ক্রোকারীজ, হার্ডওয়্যার, সোনাকার, কামারালয়, কাচাবাজার, সেলুন ও অসংখ্য খাবার হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি।  তবে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনে এখানে অবিশ্বাস্যভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য তথ্য সেবা কেন্দ্র, সাইবার ক্যাপে, স্টুডিও, ফটোকপির দোকান তথা অসংখ্য কম্পিউটারের দোকান। যার কল্যানে এখানকার মানুষ দুর প্রবাসে আত্নীয়-স্বজনদের সাথে স্কাইপী, গুগল টক, ইয়াহু ম্যাসেঞ্জারের, ফেইস বুক ও টুইটারের মত আধুনিক যোগাগের সাইটগুলো ব্যাবহার করে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছে।

কেউ কাজ করছে, কেউ ফসল ফলাচ্ছে, কেউ কিনছে কেউ বেচছে সবমিলিয়ে বলা যায় দ্বীপ উপজেলা মনপুরার মানুষ সামষ্টিকভাবে ব্যবসার সাথে জড়িত।